আজ ১৪ জুলাই ২০২০, মঙ্গলবার) বিকাল ০৩.৩০ ঘটিকায় নগরীর পাথরঘাটাস্থ জপমালা রাণী ক্যাথিড্রাল গীর্জায় শেষকৃত্য অনুষ্ঠান এর মধ্য দিয়ে এবং হাজারো মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন চট্টগ্রামের আর্চবিশপ (চট্টগ্রামে খ্রিস্টান সমাজের প্রধান ধর্মগুরু) পরম শ্রদ্ধেয় মজেস এম. কস্তা, সিএসসি। শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের প্রধান পৌরিহিত্য করেন বাংলাদেশ কাথলিক বিশপ সম্মিলনীর চেয়ারম্যান মহামান্য কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও, সিএসসি। তাছাড়া সহ-পৌরিহিত্য করেন, রাজশাহী ডাইয়োসিসের বিশপ পরম শ্রদ্ধেয় জের্ভাস রোজারিও; সিলেট ডাইয়োসিসের বিশপ পরম শ্রদ্ধেয় বিজয় ডি’ক্রুজ, ওএমআই; খুলনা ডাইয়োসিসের বিশপ পরম শ্রদ্ধেয় জেমস রমেন বৈরাগী; বরিশাল ডাইয়োসিসের বিশপ পরম শ্রদ্ধেয় লরেন্স সুব্রত হাওলাদার, সিএসসি; দিনাজপুর ডাইয়োসিসের বিশপ পরম শ্রদ্ধেয় সেবাস্টিয়ান টুডু; ঢাকা আর্চডাইয়োসিসের সহকারী বিশপ পরম শ্রদ্ধেয় শরৎ ফ্রান্সিস গোমেজ-সহ সারা বাংলাদেশ থেকে আগত প্রায় অর্ধশত যাজকগণ। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠানে যোগদান করেন শত শত খ্রিস্টভক্ত। এর আগে সকাল ০৭ ঘটিকা থেকে আর্চবিশপ মহোদয়কে ক্যাথিড্রাল গীর্জা প্রাঙ্গনে অন্তিম শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন সর্বস্তরের জনসাধারন । স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুশৃঙ্খলভাবে হাজারো ভক্ত ও অনুরাগী এই সময়ে আর্চবিশপ মজেস এম. কস্তা, সিএসসি’কে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলাদেশের খ্রিস্টান সমাজে। শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রি তার আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার নিকবর্তী সকলকে সমবেদনা জানান। কাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস এর দপ্তর থেকে শোক প্রকাশ করেছেন মহামান্য কার্ডিনাল টাগ্লে। সেই সাথে সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খ্রিস্টান সমাজের নেতা ও ভক্তবৃন্দ শোক প্রকাশ করে সমবেদনা জানিয়েছেন। এছাড়া খ্রিস্টভক্তদের সাথে একাত্ম হয়ে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এমপি; বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মহাসচিব জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীল; চট্টগ্রাম ৯ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল; চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সমাজ এর বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ। শোক প্রকাশ করে চট্টগ্রাম ৯ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বলেন ’বড়দিনসহ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিভিন্ন উৎসবে পাথরঘাটা গির্জায় সকল ধর্মের মানুষ এবং বিভিন্ন শ্রেণীপেশার নাগরিকদের সম্মিলনের আয়োজন করতেন তিনি। চট্টগ্রাম অঞ্চলে শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সেবামূলক বিভিন্ন কর্মকাÐেও নিজেকে জড়িত রেখেছিলেন। তার মৃত্যুতে চট্টগ্রামবাসী একজন সর্বজন র্স্বীকৃত সমাজ সেবক হারালো।’ শোক প্রকাশ করে চট্টগ্রাম মাননীয় মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বলেন, ’আর্চবিশপ মোজেস এম. কস্তা, খ্রিস্টান ব্যক্তিত্ব হলেও তিনি চট্টগ্রামের সব ধর্মের শ্রেণীপেশার মানুষের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। আমি তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা ও শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্য, ভক্তবৃন্দের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে কার্ডিনাল প্যাট্রিক বলেন, বিগত ২৪ বছর ধরে, ১৯৯৬ থেকে আজ পর্যন্ত তিনি প্রথমে ১৫ বছর দিনাজপুর ধর্মপ্রদেশে এবং বৃহত্তর চট্রগ্রাম ধর্মপ্রদেশে ৬ বছর তিনি ধর্মপাল ছিলেন। তার পরিচালনায় ও পরিশ্রমে চট্টগ্রামকে আর্চডায়োসিস হিসেবে নির্মাণে এক বিরাট ভ‚মিকা রেখে, বিগত আড়াই বছর ধরে চট্টগ্রাম মহাধর্মপ্রদেশের মহাধর্মপাল হিসেবে নিরলসভাবে, দৃঢ়তার সাথে এবং কষ্টভোগী সেবক হিসেবে ধর্মপ্রদেশের সামগ্রিক ও সমন্বিত উন্নয়নে কাজ ও সেবা করে গেছেন। তিনি আরো বলেন, আর্চবিশপ মজেস ছিলেন দরিদ্র, সংখ্যালঘু, পাহাড়ী এবং ন্যায় ও মানবাধিকার বঞ্চিত জনগণের আশ্রয়স্থল ও প্রেমিক।
উল্লেখ্য, চটগ্রাম আর্চডাইয়োসিসের আর্চবিশপ (প্রধান ধর্মগুরু) পরম শ্রদ্ধেয় মজেস এম. কস্তা, সিএসসি গতকাল ১৩ জুলাই ২০২০, সোমবার সকাল ০৯.২০ ঘটিকায় স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকায় শেষ নিংঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, জ্বর ও কাশি নিয়ে ১৩ জুন ২০২০ তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ০৭ জুলাই ২০২০ পর্যন্ত তিনি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছিলেন কিন্তু হঠাৎ করেই তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে থাকে এবং ০৯ জুলাই তাকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয় যেখানে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। চিকিৎসকদের মতে তিনি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে একাধিক স্ট্রোক করেছেন এবং তাতেই তার মৃত্যু হয়েছে।
তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলাদেশের খ্রিস্টান সমাজে। কাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস এর দপ্তর থেকে শোক প্রকাশ করেছেন মহামান্য কার্ডিনাল টাগ্লে। সেই সাথে সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খ্রিস্টান সমাজের নেতা ও ভক্তবৃন্দ শোক প্রকাশ করে সমবেদনা জানিয়েছেন। এছাড়া খ্রিস্টভক্তদের সাথে একাত্ম হয়ে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এমপি; বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মহাসচিব জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীল; চট্টগ্রাম ৯ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল; চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সমাজ এর বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ। শোক প্রকাশ করে চট্টগ্রাম ৯ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বলেন ’বড়দিনসহ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিভিন্ন উৎসবে পাথরঘাটা গির্জায় সকল ধর্মের মানুষ এবং বিভিন্ন শ্রেণীপেশার নাগরিকদের সম্মিলনের আয়োজন করতেন তিনি। চট্টগ্রাম অঞ্চলে শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সেবামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডেও নিজেকে জড়িত রেখেছিলেন। তার মৃত্যুতে চট্টগ্রামবাসী একজন সর্বজন র্স্বীকৃত সমাজ সেবক হারালো।’ শোক প্রকাশ করে চট্টগ্রাম মাননীয় মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বলেন, ’আর্চবিশপ মোজেস এম. কস্তা, খ্রিস্টান ব্যক্তিত্ব হলেও তিনি চট্টগ্রামের সব ধর্মের শ্রেণীপেশার মানুষের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। আমি তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা ও শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্য, ভক্তবৃন্দের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
পরম শ্রদ্ধেয় মজেস এম.কস্তা, সিএসসি চট্টগ্রামের বিশপ হিসেবে মনোনীত হন ৬ এপ্রিল ২০১১ খ্রিস্টাব্দে এবং ২৭ মে ২০১১ তারিখে তিনি চট্টগ্রামের বিশপ হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। এর আগে ১৯৯৬-২০১১ খ্রি পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ বছর তিনি দিনাজপুর ডাইয়োসিসের বিশপ হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ২০১৭ সালে চট্টগ্রামকে আর্চডাইয়োসিসে উন্নীত করা হলে পরম শ্রদ্ধেয় মজেস এম. কস্তা, সিএসসি’কে চট্টগ্রামের প্রথম আর্চবিশপ হিসেবে নিযুক্ত করেন পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্স্সি।
ব্যক্তিজীবনে আর্চবিশপ মজেস ছিলেন ঈশ্বরভীরু, সাহসী, আত্মবিশ্বাসী, দুরদর্শী ও বিনয়ী। তার ন¤্র কিন্তু আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিত্বের কারণে তিনি সর্বস্তরের জনগণ এর কাছে একজন উৎকৃষ্ট খ্রিস্টিয় সেবক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি দিনাজপুর ও চট্টগ্রাম ডাইয়োসিসের উন্নয়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন বহু সেবা প্রতিষ্ঠান। তিনি অংশগ্রহণকারী সমাজে বিশ্বাস করতেন এবং সবসময় ব্যক্তি-সমাজের উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালাতেন। চট্টগ্রামে আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃমাণ্ডলীক সৌহার্দ্য, সুস্পমর্ক সৃষ্টিতে তার অবদান অনস্বীকার্য। আজ তার এই মহাপ্রয়ানে চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিস হারিয়েছে তার দক্ষ কাণ্ডারীকে বাংলাদেশ খ্রিস্ট মণ্ডলীতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আমরা তার আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।